🖋 আহসান রাজীব: এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর-নভেম্বর—বছরের এই দুই সময়কে বলা হয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুম। এখন মে মাস, অর্থাৎ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জন্য সতর্ক থাকার সময়।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মে মাসের শেষ সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে দুটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। সেগুলোর মধ্যে একটি ২৭ মে’র দিকে লঘুচাপ হিসেবে শুরু হয়ে ২৯ মে নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, যার নাম হবে “মন্থা”—এই নামটি দিয়েছে থাইল্যান্ড। একই সময়ে আরব সাগরেও তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড় “শক্তি”, নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া।
বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলা নিয়মিতই ঝুঁকির মুখে থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ এলে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে পারিবারিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
🌀 ঘূর্ণিঝড়ের আগে করণীয়
-
দুর্যোগ সহনশীল ঘর তৈরি করুন—উঁচু ভিটা ও মজবুত কাঠামো নিশ্চিত করুন।
-
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করুন, খাবার ও ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখুন।
-
তাল, নারকেল, সুপারি জাতীয় ঝড় সহনশীল গাছ লাগান।
-
হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর জন্য নিরাপদ আশ্রয় এবং খাবার মজুত রাখুন।
-
শুকনো খাবার, ওষুধ, পরিচয়পত্র, নগদ টাকা প্রস্তুত রাখুন।
-
আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তাটা আগেই দেখে রাখুন।
-
রেডিও-টিভিতে নিয়মিত আবহাওয়া খবর শুনুন, অথবা ১০৯০ নম্বরে ফোন করে জেনে নিন।
🌪 ঘূর্ণিঝড় চলাকালে করণীয়
-
সিপিপি’র স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
-
মহাবিপদ সংকেত (৩ পতাকা) পেলেই পরিবারসহ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।
-
শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ওষুধ সঙ্গে নিন।
-
গর্ভবতী নারী, শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন।
-
ঘরে পানি ঢুকতে পারে এমন টিউবওয়েলের মুখ পলিথিন দিয়ে বেঁধে দিন।
-
গবাদিপশু নিরাপদ স্থানে রাখুন অথবা বাধন খুলে মুক্ত করে দিন।
☀ ঘূর্ণিঝড়ের পরে করণীয়
-
নিখোঁজদের খোঁজ করুন, প্রয়োজনে সিপিপির সহায়তা নিন।
-
ঘর, টিউবওয়েল, পায়খানা মেরামত ও পরিষ্কার করুন।
-
পানির জন্য সংরক্ষিত বৃষ্টির পানি ব্যবহার করুন বা ফুটিয়ে পান করুন।
-
ক্ষয়ক্ষতি অনুযায়ী সরকার বা এনজিওর সহায়তা নিন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় ঠেকানো না গেলেও প্রস্তুতির মাধ্যমে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। তাই এখন থেকেই সচেতন হোন, নিরাপদ থাকুন।
👉 পরিবারের সবাইকে জানিয়ে রাখুন এই তথ্যগুলো, দুর্যোগে সচেতনতা আপনার সবার জীবন বাঁচাতে পারে।