সাতক্ষীরা দুপুর ১:১৫ সোমবার , ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ২৭শে জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি
    1. অর্থনীতি
    2. আইসিটি
    3. আন্তর্জাতিক
    4. আশাশুনি
    5. উপকূল
    6. কলাম
    7. কলারোয়া
    8. কালিগঞ্জ
    9. কৃষি
    10. খুলনা
    11. খেলার খবর
    12. জাতীয়
    13. জেলার খবর
    14. জ্বালানি
    15. তালা
    https://shoyaibenterprise.com/
    আজকের সর্বশেষ সবখবর

    মাঠ প্রশাসনে ছুটে চলা অদম্য এক নারী রনী খাতুন

    mir khairul alam
    এপ্রিল ২৮, ২০২৫ ৯:৫৩ অপরাহ্ণ
    Link Copied!

    ডেস্ক রিপোর্ট: ঘড়ির কাঁটা রাত ১টা ছুঁই ছুঁই। বাসায় ফিরে বেডরুমে ঢুকতেই নজর পড়ে সেদিকে। নেই খাওয়া-দাওয়া। নিরন্তর ছুটে চলেছি উপকূলে থাকা মানুষের কাছে। এদিকে রাত জেগে অপেক্ষায় বসে আছে আমার পরিবারের মানুষজন। কিন্তু দিনশেষে মায়ের অপেক্ষায় থাকা তিনটা ছোট বাচ্চা ঘুমে কাতর। সবচেয়ে ছোটটা মাত্র ১১ মাস বয়স। সে যেখানে মায়ের কোলে থাকবে, সেখানে মাকে না পেয়ে সে খাটের এক কোণে আনমনে শুয়ে। আর দুইটা বাচ্চা বোঝার মতো হয়েছে। অন্ধকারের মাঝে আফসা আলোতে বাচ্চাদের নিষ্পাপ মুখ গুলো দেখে খুবই নিজেকে অসহায় মনে হলো। তাদের কাছে যেতে না যেতেই চোখে পানি চলে আসল। তাদের মায়ের কোল না পাওয়া অসহায়ত্ব দেখে নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনে হলো। পরে ভাবলাম আল্লাহ আমাকে যে দায়িত্ব পালনের তৌফিক দিয়েছেন তার মধ্যেই হয়তো আমার বাচ্চাদের ভালো নিহিত আছে। আল্লাহর কাছে এইটুকুই চাওয়া আমাদের উপকূলের মানুষের জান-মাল যেন তিনি রক্ষা করেন এমনি ভাবে বিষন্ন মনে কথাগুলো বলছিলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুছা রনী খাতুন।

     

    তিনি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাথানগাছী গ্রামের মো আলতাফ হোসেন ও সুফিয়া খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। ৩৫তম বিসিএসের এই মোছা রনী খাতুন এখন শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন। মাতৃত্বের দায়িত্বকে ফেলে রেখে আপনি যেভাবে মানুষের জন্য কাজ করছেন সেটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংগ্রামী নারী বলেন, বাচ্চাদেরকে দেখাশোনা করা যেমন আমার মাতৃত্বের দায়িত্ব তেমনি আমার সরকারি দায়িত্ব ও সমান ভাবে পালন করা একান্ত কর্তব্য। আমার বাসায় তিনটা ছেলে মেয়ে থাকতে পারে কিন্তু আমার উপজেলার ছেলে মেয়ের সংখ্যা হাজার হাজার। আমি চাই তাদের মুখে হাসি ফুটাতে। সুখে দুঃখে আমি তাদের পাশে থাকতে। তাদের কাছে থেকে কাজ করে যাচ্ছি রাতদিন। আমার উপজেলা খুবই অবহেলিত কিন্তু আমি তাদের কষ্টকে ভাগ করে নিয়ে তাদের সাথে থেকে কাজ করছি। আমার ছেলে মেয়ে দেখার জন্য আমার পরিবার আছে। কিন্তু আমার উপজেলার সুখ দুঃখ তো আমাকে দেখতে হবে। তাই মাতৃত্বের বিষয়টি যেমন দায়িত্ব তেমনি আমার উপজেলাকে দেখে রাখা ও আমার একান্ত দায়িত্ব কর্তব্য। সময়টা ১৯-২০ জানুয়ারি। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বিএনপির বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে রীতিমত ইট বৃষ্টি চলছে। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে নেমে জ্যাকেট কিংবা হেলমেট ছাড়াই শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন জীবনকে বাজি রেখে দৌড়াতে লাগলেন উভয় পক্ষের মধ্যবর্তী স্থানের উদ্দেশ্যে। সেদিন তার সাহস যেন দুই পক্ষের মারামারির অবসান ঘটায়। রীতিমত চমকে দেয়ার মত এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. রনী খাতুন। একজন নারী কর্মকর্তা হয়েও কোনো ধরনের নিরাপত্তা সামগ্রী ছাড়াই ‘বাটল ফিল্ডে’ তার এমন উপস্থিতি চমকে দিয়েছে সবাইকে। সাহসিকতাপুর্ন তার এমন ভুমিকার জন্য সাধারণ মানুষসহ দু’পক্ষই রীতিমত তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সম্প্রতি শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জের সিংহড়তলী এলাকায় ভেড়ি বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেয়। কিন্তু তিন দিন কেটে গেলেও সেটাকে রোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই ভাঙন রোধ করার জন্য বাল্কহেড এসে পৌছালেও তারা ভরা কোটাল এর কারণে বালু উত্তোলনে রাজি হচ্ছিল না। একথা শুনে তাৎক্ষণিক রনীী খাতুন তার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত ও ওসিকে সাথে নিয়ে বাল্কহেডের ড্রাইভার ও মালিককে রাজি করে বালু তোলার কাজ শুরু করেন। সময় তখন রাত ১২.৪৫ মিনিট। স্বামী সন্তান সব কিছু ফেলে রেখে দিনরাত তিনি সেখানে পরিশ্রম করেছেন এবং উপকূলের সকাল মানুষের হাসি ফুটিয়েছেন। তাদের শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছেন। আপনি থাকেন সারাদিন চাকরিতে আপনার বাচ্চাদের কিভাবে সময় দেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি প্রতিদিন সকাল ০৯ টায় অফিসে যায়, ফিরতে ফিরতে প্রতিদিন প্রায় রাত ৮:৩০ বাজে। সারাদিন বাইরে অফিসের কাজে ব্যস্ত থেকে রাত হলে সব কষ্টের অবসান ঘটিয়ে ছেলে মেয়েদের একটু সময় দেওয়ার চেষ্টা করি। রাতে ঘুমানোর সময় ওদের আদর করি, বড় মেয়ে এবং মেজো ছেলেটা আমার হাতে খাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকে। আমি প্রতিদিন রাতে বাসায় গিয়ে তাঁদের মুখে তুলে খাওয়ানোর চেষ্টা করি। তবে সেটা সেটি সব সময় হয়ে উঠে না। তারা ও দিন দিন বুজতে শিখছে মায়ের কষ্ট, মায়ের কাজ। আমার কষ্ট বলতে কিছু নেই। আমি সেবক। আমি আমার সকল সন্তানদের সেবা দিয়ে যাবো। তবে আমার জীবনে আমার পরিবার আমার স্বামী, শাশুড়ী , শ্বশুর, বাবা-মা ভাইয়েরা ভীষণভাবে সাহয্য করেছে সামাজিক ও মানসিক ভাবে। আমি আমার মাতৃত্ব এবং আমার সরকারি দায়িত্ব ভীষণ ভালোবাসি। আামর উপর অর্পিত সকল দায়িত্ব পালন করতে আমার ভালো লাগে।

    এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।