মীর খায়রুল আলম: সাতক্ষীরায় শীতের আগমনীতে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। শীতের শুরুতেই অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুরগাছের কদর বেড়ে গেছে।
গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছেন। শুরু করেছে খেজুর গাছের প্রাথমিক পরির্চযাও। যাকে বলা হয় ‘গাছ তোলা’।এক সপ্তাহ পরই আবার গাছে চাছ দিয়ে নলি ও গুজা লাগানো হবে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশেষত রাস্তার পাশে এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা ও চাঁছার দৃশ্য।আর কিছুদিন পরই রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়, পাটালি তৈরির উৎসব। সুস্বাদু ও পিঠাপুলির জন্য আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে।শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুরগাছ কাটার প্রতিযোগিতায় গাছিরা।
খেজুরের গাছ পরিষ্কার বা তোলার জন্য গাছি দা, পাটের দড়ি তৈরি সহ ভাঁড় মাটির তৈরি ক্রয় ও রস জ্বালানো চুলা ঠিক করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত। শীত এলে রসের চাহিদা থাকে। এ কারণে এর সঙ্গে জড়িতদেরও উপার্জন ভালো হয়। কথা হয় গাছি সুরত আলীর সাথে তিনি জানান, দীর্ঘ অনেক বছর যাবৎ তিনি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ করে আসছেন।
জুজখোলা গ্রামের মধু মোড়ল জানান, তাঁর ১০ গন্ডা খেজুর গাছ তোলার কাজ চলছে।একটা গাছ তোলা থেকে রস সংগ্রহ করতে ১৫০ টাকা গাছিকে দিতে হয়। একভাড় রস ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়পাটকেলঘাটার গাছি শওকাত আলী খা ও জাকাত আলী জানান, এক ভাঁড় রস জ্বালানোর পর তাতে গুড় হয় প্রায় এক কেজি।যার দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাটালিও হয় একই পরিমাণ। এলাকার সর্বত্রই রয়েছে খেজুর গাছের আধিক্য। সুস্বাদু ও পিঠাপুলির জন্য আবশ্যক উপকরণ হওয়ায় এখনো খেজুর রসের চাহিদা রয়েছে। তবে অঞ্চলগুলোতে খেজুরগাছ কমে গেছে।
বিভিন্ন এলাকাঘুরে দেখা গেছে এখন আর আগের মতো মাঠ ভরা খেজুর বাগান দেখা যায় না।নেই মাঠে মাঠে রস জ্বালানো বান (চুলো)। যা আছে তা নিতান্তই কম। নলেন গুড়, পাটালি পাওয়া দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে।
পাটকেলঘাটার ৩নং সরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ মাসুদ রানা জানান, ইট পোড়ানোর কাজে এলাকার খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে। যার প্রভাব পরিবেশের ওপরও পড়ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশবিদদের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, মজুরি বৃদ্ধি ও জ্বালানির দাম বেশি হয় মানুষ এখন আর খেজুর গাছ কাটতে চায় না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে খেজুর গাছ কাটা শিবলি তৈরি করতে হবে। একই সাথে রাস্তার দুই ধারে খেজুর গাছ লাগিয়ে চাষ বৃদ্ধি করা যেতে পারে।